প্রশ্নঃ জারণ সংখ্যা বলতে কী বুঝ? জারণ সংখ্যা কিরূপে নির্ণয় করা হয়।
উত্তরঃ কোন যৌগে একটি পরমাণু যে অবস্থায় আছে, মৌলের মুক্ত অবস্থা হতে সে অবস্থায় আসতে পরমাণুটিকে যতসংখ্যক ইলেকট্রক বর্জন বা গ্রহণ বা শেয়ার করতে হয়, সেই সংখ্যাকে ঐ যৌগে ঐ পরমাণুর জারণ সংখ্যা বলে। কোন যৌগে কোনো মৌলের উপরিস্থিত চার্জ সংখ্যাকে ঐ যৌগে মৌলটির জারণ সংখ্যা বলে।
ইলেকট্রন দান করলে জারণ সংখ্যা ধনাত্মক এবং ইলেকট্রন গ্রহণ করলে জারণ সংখ্যা ঋণাত্মক হয়। প্রকৃতপক্ষে কোন যৌগে কোন মৌল কতসংখ্যক কিরূপ তড়িৎ আধানযুক্ত, জারণ সংখ্যা তাই নির্দেশ করে।
উদাহরণঃ আয়নিক যৌগে NaCl গঠনকালে Na পরমাণু থেকে একটি ইলেকট্রন অপসারিত হয়েছে। সুতরাং এই যৌগে Na এর জারণ সংখ্যা +1 । অপরদিকে Cl পরমাণু একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করেছে। অপসারণের বিপরীত প্রক্রিয়া ঘটেছে বলেই এই যৌগে Cl এর জারণ সংখ্যা -1 । অবশ্য সমযোজী যৌগের ক্ষেত্রে জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের সময়, শেয়ারকৃত ইলেকট্রনের প্রতি যে মৌলের আসক্তি বেশি তার জারণমান “-” চিহ্ন এবং যে মৌলের আসক্তি কম তার জারণ মান “+” চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন – HCl এ H এর জারণ মান +1 এবং Cl এর জারণ সংখ্যা -1
জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের নিয়মঃ
১। চার্জ নিরপেক্ষ যৌগে উহার মৌলসমূহের জারণ সংখ্যার বীজগণিতীয় যোগফল শূণ্য হবে। আয়নের বেলায় এই যোগফল আয়নের চার্জের সমান হয়।
২। অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা পার অক্সাইড -1, সুপারঅক্সাইড (KO2) – ½ ধরা হয়, অক্সাইডে -2 ধরা হয়।
৩। স্বাভাবিক মুক্ত অবস্থায় সব মৌলের জারণ সংখ্যা শূণ্য।
৪। আন্তঃ হ্যালোজেন যৌগসমূহে অধিকতর তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলের জারণ সংখ্যা -1 .
৫। ক্ষারীয় ধাতুসমূহের জারণ সংখ্যা +1 এবং মৃৎক্ষার ধাতুসমূহের জারণ সংখ্যা +2.
প্রশ্নঃ জারণ সংখ্যা ও যোজনীর মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ জারণ সংখ্যা ও যোজনীর মধ্যে পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলঃ
কতিপয় জারক ও বিজারক পদার্থের উদাহরণ
জারক পদার্থ : (ইলেকট্রন গ্রহণকারী)
1. Fe3++e−→Fe2+
(FeCl3)
2. Sn4++2e−→Sn2+⟶+2e−Sn
3.O22−+2e−→2O2−
(পারঅক্সাইড আয়ন) (H2O2)
4. Mn+7O4−8+5e−+8H+→Mn2++4H2O
(KMnO4)
5. Cr2+12O7−2+6e−+14H+→2Cr3++7H2O
(K2Cr2O7)
6. I2+2e−→2I−
7. Cu2++e−→Cu+
(CuSO4)
তবে MnO4ক্ষারীয় মাধ্যমে MnO4 এবং নিরপেক্ষ মাধ্যমে MnO2এ পরিবর্তন হয় এর জারণসংখ্যা যথাক্রমে +6 এবং +4 হয়।